রিক খুব চমৎকার একটি বাচ্চা। কিন্তু তার একটা সমস্যা হলো সে খুব ছোট ছোট বিষয়ে রেগে যায় এবং বাবা-মা বন্ধুবান্ধব সবার সাথে রাগারাগি করে। এমনকি নানা ধরণের বাজে শব্দ ব্যবহারও করে। স্কুলের শিক্ষক এবং বাবা-মা যখন তার এই রাগটা নিয়ন্ত্রণ করতে বলেন তখন রিক আরও বেশি রেগে যায়।

 

আপনার বাচ্চাও কি এমনটা করে? কিভাবে এর প্রতিকার পাবেন ভাবছেন??

যদি কোন বাচ্চা দিন দিন বদমেজাজি ও বদরাগী হয়ে উঠে তবে তার মধ্যে এমন পরিবর্তন কেন ঘটছে তা আগে বুঝতে হবে। নানা কারণে আপনার বাচ্চা এরকম রাগান্বিত হয়ে উঠতে পারে। যেমন :তার প্রতি বাবা-মার উচ্চ প্রত্যাশা, স্কুলে বন্ধুবান্ধবরা প্রতিনিয়ত তাকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করলে এমনকি শিক্ষকদের সমালোচনার জন্যও বাচ্চাদের মধ্যে বদরাগী স্বভাব বিকাশ লাভ করতে পারে।

করণীয় :

কেন সে এমন আচরণ করছে? কেন নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেনা? এসব নিয়ে বাচ্চাকে বকাঝকা না করে বাবা-মাকেই সুকৌশলে তার রাগের কারণ জেনে তা নিয়ন্ত্রণের পথ খুঁজে বের কর‍তে হবে। এ ক্ষেত্রে মা সবচেয়ে ভালো ভূমিকা রাখতে পারেন যেহেতু বাচ্চারা সাধারণত মায়েদের সাথে সবচেয়ে বেশি এটাচ্ড থাকে এবং মনের কথা শেয়ার করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।

বাচ্চা যে কাজটি করতে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে তাকে সেই কাজটি করতে দিন। যেমন: যদি বাচ্চা ছবি আঁকাতে পছন্দ করে তাকে ছবি আঁকতে দিন এবং তাকে বলুন যখন যার উপরে তার রাগ হবে সে তাকে আঁকিয়ে সেই ছবিকে শাস্তি দিতে। সে যখন এই কাজটি প্রতিদিন করতে থাকবে তখন আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন কাদের উপর এবং কেন তার এত রাগ। তারপর বাচ্চাকে বোঝানোর চেষ্টা করুন যে, যাদের উপর সে রাগ করছে তাদের কোন ক্ষতি হচ্ছেনা বরং অতিরিক্ত রাগারাগির ফলে সে নিজেরই ক্ষতি করছে।ভালো ব্যবহারের সুফল সম্পর্কে তাকে অবগত করতে হবে। তাকে বোঝাতে হবে যে রাগারাগি করার ফলে সে তার বন্ধুবান্ধবের চোখে খারাপ হয়ে যাবে, সে পড়াশোনায় ভালো করতে পারবে না ফলে শিক্ষক ও সহপাঠীরা তাকে ভালোবাসবেনা ইত্যাদি। আবার বাবা- মা তার ভালো চান এবং ভালোবাসেন বলেই তার উপর তাদের অনেক প্রত্যাশা।এতে তার কোন ক্ষতি নেই বরং বাবা-মার এই প্রত্যাশাগুলো পূরণ করতে পারলে তারই লাভ। তবে বাবা-মার উচিৎ সন্তানের উপর তাদের নিজেদের অতিরিক্ত উচ্চাকাঙ্ক্ষা চাপিয়ে না দেয়া।
যাই হোক, বাবা-মার সহযোগীতার মাধ্যমেই একটি বদরাগী বাচ্চা তার রাগকে নিয়ন্ত্রণ করে খুব ভদ্র ও নমনীয় আচরণের অধিকারী হয়ে উঠতে পারে। এতে করে তার সামাজিক সম্পর্কগুলো সুন্দরভাবে বজায় থাকবে, সে সকলের ভালোবাসা, স্নেহ পাবে এবং একাডেমিক ফলাফলেও উন্নতি সাধন হবে।

Maria Ferdousi

Scroll to Top