সাধারণত সবাই বলে ভালোবাসা একটি জটিল অনুভূতি। কিন্তু তারা ভুলে যায় যে, ভালোবাসাকে আমরাই জটিল
করে তুলি। অনেকে জানেই না যে, অন্যকে ভালোবাসা মানে আসলে কি! কারন অন্যকে ভালোবাসার প্রথম শর্তই তারা
জানেনা: প্রথমে নিজেকে ভালোবাসুন। আপনি যদি নিজেকে ভালো না বাসেন এবং নিজের যত্ন না নেন তাহলে
আপনি কখনই অন্যকে ভালোবাসতে পারবেন না। এর মানে শুধুমাত্র নিজেকে গ্রহণ করাই নয় বরং আপনি
যেরকম সেরকমভাবেই নিজেকে গ্রহণ করা ও ভালোবাসা।

এখানে কিছু টিপস আলোচনা করা হলো যার মাধ্যমে নিজেকে ভালোবাসতে পারবেন এবং অন্যকেও ভালোবাসতে
পারবেন।

১. আমরা তখনই অন্যকে ভালোবাসতে পারবো যখন নিজেকে ভালোবাসতে পারবো:

ভালোবাসার নাম করে অনেকেই অনেক ছোট-বড় অপরাধ করে ফেলে। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে এগুলো আসলে
ভালোবাসা নয়। যে আপনাকে সত্যিই ভালোবাসে সে কখনোই আপনা এমন কোন পরিস্থিতিতে ফেলবেনা যা
আপনার জন্য ক্ষতিকর।
পাশাপাশি আপনি যদি নিজেকে ভালোবাসেন তবে আপনি কখনোই নিজেকে কোন ভয়ংকর পরিস্থিতির মধ্যে
ফেলবেননা। সবসময় বিশ্বাস করবেন আপনি অন্যের ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও আন্তরিকতা পাওয়ার যোগ্য। নিজের
সম্পর্কে আপনার ভালো ধারণা থাকে আপনি নিজেও ভালো ও আনন্দিত অনুভব করতে পারবেন।

২. নিজের ত্রুটিগুলো বুঝতে চেষ্টা করুন:

নিজেকে ভালোবাসতে হলে আপনাকে প্রথমে অবশ্যই বুঝতে হবে অন্যদের মত আপনিও সকল ক্ষেত্রে
পার্ফেক্ট নন। পার্ফেকশনের জন্য শুধুমাত্র চেষ্টা করে যেতে হয় কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা আমাদের ধরা
ছোঁয়ার বাইরে। প্রত্যেকেই শারীরিক বা মানসিক কোন না কোন ভাবে ত্রুটিযুক্ত।
অনেকেই আছে যাদেরকে আপনি ত্রুটিমুক্ত ভাবছেন। কিন্তু তারাও প্রকৃতপক্ষে ত্রুটিমুক্ত নয়। তাদের
অদম্য শক্তি ও চেষ্টা তাদের ত্রুটিগুলোকে ছাপিয়ে গেছে।
যেগুলো পরিবর্তন করা সম্ভব সেগুলো পরিবর্তন করুন আর যেগুলো সম্ভব নয় সেগুলো মেনে নিন। আপনি শুধুই
আপনার মত, অন্যকেউ আপনার মত হতে পারবেনা।

৩. নিজের পক্ষ নিন:

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা অন্যকে খুশি করার জন্য সময় নষ্ট করে। বাবা-মা, প্রিয়মানুষ,
বন্ধুবান্ধব থেকে শুরু করে বস পর্যন্ত, এই তালিকা অসীম। আমরা তাদের ইচ্ছার কাছে নত না হলেও আমরা
যা করি তা আসলে তারই সামিল। এই ধরণের মানসিকতা অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে।
আপনি যদি নিজের পক্ষ না নেন এবং নিজের মতামতকে গুরুত্ব দিতে না পারেন তবে কখনোই আত্ন-তৃপ্তি লাভ
করতে পারবেননা। অনেক কিছুই হয়ত আপনার কাছে বিরক্তিকর লাগতে পারে আবার আপনার নিজের প্রতি
ঘৃণাও তৈরি করতে পারে। তাই আপনার যা ঠিক মনে হয় তাই করুন।

৪. নিজের যত্ন নিন:
পুষ্টিকর খাবার খাওয়া এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত গোসল করা, পরিষ্কার
পরিচ্ছন্ন পোষক পরা ইত্যাদি আমাদের ভালো অনুভব করায় এবং অস্বস্তিভাব কমায়। Self-acceptance
তখনই সহজ হবে যখন আপনি ভালো, পরিষ্কার অনুভব করবেন।
নিয়মিত ব্যায়াম করার মাধ্যমে Endorphin নামক হরমোন নিঃসৃত হয় যা আপনার মধ্যে আনন্দের অনুভূতি
বৃদ্ধি করে এবং গোসল আপনার রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে।

৫. নিজের উন্নতির জন্য কাজ করুন:
উত্তরোত্তর উন্নতি করার ইচ্ছা মনে পোষণ করুন। নতুন নতুন জিনিস শিখুন। নিজের Best version হওয়ার
চেষ্টা করুন। সে সমস্ত বিষয় বা শখ গুলোর উন্নতি করার চেষ্টা করুন যেগুলো আপনি।সাধারণত উন্নত করার
চেষ্টা করেননা। আপনি কোন কাজটা সবচেয়ে ভালো করতে পারেন, কি ভালো করতে পারবেন তা বোঝার চেষ্টা
করুন এবং সেগুলো ভালোভাবে করার চেষ্টা করুন।
আপনার প্রতিভাকে জানুন এবং সেগুলোর প্রশংসা করুন এবং নিজের মধ্যে লালন পালন করুন।

৬. নিজেকে ক্ষমা করুন:
অন্যকে ক্ষমা করতে পারা শেখার আগে নিজেকে ক্ষমা করতে শিখুন। অতীতের কোন কাজের জন্য হয়তো
আপনি অনুশোচনা করছেন কিন্তু সেটা ঠিক করা সম্ভব নয়, আর এই অনুভূতি আপনাকে আনন্দিত হতে এবং
নিজেকে ভালোবাসতে বাধা দেয়। নিজের ভুলকে স্বীকার করুন এবং একই কাজ পুনরায় না করার সংকল্প করুন।
অতীতকে অতীত হয়েই থাকতে দিন।

TASKS:

১. অন্যের সাথে নিজেকে তুলনা করা বন্ধ করুন।
২. নিয়মিত ব্যায়াম করুন কারণ এটা মানসিক ও শারীরিক ভাবে ভালো থাকতে সাহায্য করে।
৩. নিজের ক্যারিয়ারের পাশাপাশি নিজস্ব একটি Hobby খুঁজে বের করুন।
৪. নিয়মিত বন্ধুবান্ধবের সাথে সাক্ষাৎ করুন এবং পারলে ফোনে কথা বলুন। বন্ধুরা আমাদের সবসময় আনন্দ
দেয়।
৫. নিজের প্রতি বেশি কঠোর হবেননা।
৬. নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখুন এবং নিজের যোগ্যতাগুলোকে জানুন। আপনার ব্যাপারে অন্যের সিন্ধান্ত গ্রহণ
করা বন্ধ করুন।
৭. নিজেকে সুসজ্জিত রাখুন।

Maria Ferdousi

Scroll to Top