একবার নিজের সম্পর্কে একটু ভাবুন তো-
১। আপনার কি কখনো এমন মনে হয়েছে আপনার হাতে প্রচুর সময় রয়েছে কিন্তু আপনি সময়টাকে
কাজে লাগাতে পারছেন না?
২। আপনার সময়টা ঠিকই অন্য কাজে চলে যাচ্ছে কিন্তু আপনার কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না?
৩। আপনি দিনের অধিকাংশ সময়েই আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কাটিয়ে দিচ্ছেন, কিন্তু
আপনার প্রয়োজনীয় কাজগুলো আর করা হচ্ছে না?
৪। আপনার কি কখনো এমন মনে হয়েছে আজ করবো কাল করবো বলে সময় শুধু পিছিয়েই যাচ্ছে কিন্তু
আপনার কাজটি আর হচ্ছে না?
৫। আপনার কি কখনো এমন মনে হয়েছে আপনি আপনার কাজগুলো কোনটা আগে করবেন কোনটা পড়ে
করবেন আপনি বুঝতে পারছেন না। এই চিন্তা করতে করতে কাজটা আর করা হচ্ছে না?
৬। এমন কি কখনো মনে হয়েছে, কোন কাজ করতে গেলেন, কাজটা দেখে অনেক কঠিন লাগছে, মনে
হচ্ছে পারবো না তাই আর করা হচ্ছে না?
এই সমস্যাগুলো সাধারণত হয়ে থাকে কারন আমরা সঠিক ভাবে আমাদের সময়টাকে কাজে লাগাতে পারি
না। তাই সঠি সময় ব্যাবস্থাপনা করার জন্য আপনি নিচের টিপসগুলো ব্যাবহার করতে পারেন।
কোন টু-ডু লিস্ট অথবা এপয়েন্টমেন্ট ডায়রি ব্যবহার করুন
আপনার দ্বায়িত্ব এবং কাজগুলোকে লিখে রাখার অনেক গুলো উপকারীতা আছে। এটা শুধুমাত্র
আপনার কাজগুলোকেই নিশ্চিত করে না এর পাশাপাশি আপনি যাতে ভুলে না যান সেজন্যও সাহায্য করে
থাকে। এর পাশাপাশি এটি আপনার মনের মধ্যে একটি চেকলিস্ট প্রদান করবে যা আপনার মানসিক
চাপ কমাতে সাহায্য করবে।
আপনার কাজগুলোকে অগ্রাধিকার হিসেবে সাজান
আপনার কোন কাজগুলো বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং কোনগুলো দ্রুত শেষ করা যাবে সেগুলোর প্রতি ফোকাস
করুন এবং এগুলো আগে করুন। আপনার টু-ডু লিষ্টে যদি অল্প কয়েকটা কাজ থাকে যেগুলো মাত্র ৫
মিনিটেই শেষ করা যাবে সেগুলো দ্রুত করার চেষ্টা করুন, এর ফলে একটা মানসিক শান্তি পাওয়া যায়।
বড় কাজগুলোকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করুন
যখন আপনার সামনে একটা বেশ বড়সড় কাজ থাকবে, এর ফলে হতবিহ্বল হওয়াটাই স্বাভাবিক। তখন
মনে হবে আমি মনে হয় পারবো না, এই করতে করতে কাজটি শুরু করা হয় না। বড় কাজটিকে ছোট ছোট
অংশে ভাগ করুন, এর ফলে এটি আপনাকে কাজটি শুরু করতে সাহায্য করবে, এমনটি কাজটির সবচেয়ে
কঠিন অংশটুকুও করার জন্য সাহায্য করবে। উদাহরণস্বরুপ, কোন রিসার্স পেপার লেখার ক্ষেত্রে
আপনটি কাজটিকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করতে পারেন যেমন, আউটলাইন প্রস্তুত করা, ভুমিকা লেখা,
ডিজাইন লেখা, রেজাল্ট লেখা, ইত্যাদি।
যেগুলো আপনার কাজে বিঘ্ন ঘটায় সেগুলো কমিয়ে দিন
কয়েকদিন বেশ মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করুন, আপনি কতক্ষন সময় কাজে বিঘ্ন সৃষ্টিকারী বিষয়ে
সময় দিচ্ছেন যেমন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, মোবাইল, টিভি ইত্যাদি। এরপরে যেগুলো বিঘ্ন ঘটায়
সেগুলোর যেগুলো আপনার ভালো লাগে না সেগুলো বন্ধ করে দিন এবং যেগুলো আপনার ভালো লাগে এবং
আপনি এনজয় করেন সেগুলোর জন্য একটি শিডিউল করুন। সব সময় একটা এলার্ম সেট করে নিবেন
এর ফলে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার কখন কাজে ফিরতে হবে।
আপনি যদি আপনার কাজে বিঘ্ন সৃষ্টিকারী বিষয়গুলোকে কমাতে না পারেন, তাহলে তাদের কাছ থেকে
দুরে থাকুন
আপনি যদি বুঝতে পারেন, যে আপনি ক্রমশই কাজে বিঘ্ন সৃষ্টিকারী বিষয়গুলোতে নিমজ্জিত হয়ে
যাচ্ছেন, তাহলে তাদের কাছ থেকে দুরে থাকুন। আপনার কাজ এবং খেলার মধ্যে একটি স্পষ্ট সীমানা
বজায় রাখুন, আপনি আপনার দরজায়, “ডিস্টার্ব করবেন না” লেখা বোর্ড ঝোলাতে পারেন, মোবাইল
ফোন বন্ধ রাখতে পারেন, অথবা টিভি না দেখে আপনি অন্য কিছু করতে পারেন। এই বিষয়ে এক এক
জন এক ভাবে করে থাকে, – আপনার লক্ষ্য স্থির করতে হবে আপনাকে পরিবর্তন হতে হবে।
কাজের মধ্যে নিজেকে কিছু সময় দিন
আপনার কোন এপয়েন্টমেন্ট থাকলে, পরিকল্পনা করুন ১৫ মিনিট আগে পৌছাতে, এবং সাথে করার
জন্য কিছু নিয়ে নিন যাতে অপেক্ষার সময়টুকুতে আপনি এটা করতে পারেন, এর ফলে বিরক্ত লাগবে
না। কিছু অতিরিক্ত সময় হাতে রাখবেন, এটি দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকা কাজের ফলে সৃষ্ট মানসিক
চাপ কমাতে সাহায্য করবে।
নিজেকে একটু কম নিখুঁত হতে দিন
আপনি যদি আপনার সব কাজ একদম নিখুঁতভাবে করার চেষ্টা করেন, তাহলে আপনি আপনার অন্য
কাজগুলো করতেই পারবেন না। আপনি আপনার সব কাজগুলো সহনশীল পর্যায়ে সম্পন্ন করার জন্য
ফোকাস করুন অর্থাৎ যতটুকু না হলেই নয়, এবং আপনার হাতে যদি যথেষ্ট সময় থাকে তাহলে
পুনরায় কাজটিকে আরো কিভাবে ভালো করা যায় তার চেষ্টা করুন।