আমাদের খারাপ লাগার একটা দিক নিয়ে আজ একটু আধটু আলোচনা করি। মানসিক চাপ নিয়ে কথা বলি।আমরা সবাই এর সাথে কম বেশি পরিচিত। কে প্রেসার অনুভব করি না।! প্রতিদিন এই কাজ সেই কাজের মাঝে , নিত্যদিনের সঙ্গী হয় মানসিক চাপ।
আপনি কি জানেন, মানসিক চাপ সৃষ্টি হয় কেন! যখন চাহিদা আর যোগানের মধ্যে ফারাক তৈরী হয়, তখন মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়। এই ধরেন, আপনি সকালে উঠতে চান, কিন্তু পারেন না। এখন পারার জন্য আপনি কি করেন, প্রথমত এলার্ম সেট করেন, তারপর এলার্ম বাজে আপনি ঘুমান। এলার্ম সেট করে উঠে বসবেন,ঘুম না আসার জন্য চোখে পানি দিবেন। কিছু একটা করতে হবে। আপনি কি তা করেন।? লক্ষ্য করুন একটা গ্যাপ আছে আপনার যোগানের।ফলে আপনি দেরী করে ঘুম থেকে উঠে মন খারাপ করছেন, আফসোস করছেন, এমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ শেষ হয় করতে পারেননি।
আবার আপনার চাহিদা কাল্পনিক বা অযৌক্তিক ও হতে পারে। তা আপনি স্বপ্ন দেখছেন বিসিএস ক্যাডার হবেন, কিন্তু আপনি তার জন্য কোনো কাজ -ই করেন না, পরিশ্রম করেন না, আপনি কি পারবেন হতে তাহলে! আমাদের এই যে মানসিক চাপ তৈরী করে কিছু স্ট্রেসর। এক একজনের জন্য এক একটি। আবার এই চাপ মানুষে মানুষে ভিন্ন। আমি যেটা স্বাভাবিক ভাবে নিচ্ছি অন্য কেউ তা নিচ্ছে না ঐভাবে,তার চাপ অনুভব হচ্ছে অস্বস্তি হচ্ছে।
তাহলে এইবার খেয়াল করি যখন আমাদের মধ্যে চাপের সৃষ্টি হবে তখন আমরা দেখব আমার যে কারনে চাপ তৈরী হয়েছে তা কি যৌক্তিক বা চাপের কারণ কি, চিন্তা করলেই পাবো। আমার চাহিদা কি এইখানে, আমি কি ঠিক মত যোগান দিতে পারছি, অথার্ৎ চাহিদা মেটাতে করনীয় কি! আমি করলেই আমার চাপ কমবে। এইটা চাপের একটি সাধারণ লজিক্যাল ব্যাখ্যা।
মানসিক চাপ হতে অনেক সময় দেখা যায় আমাদের নানা ধরণের মানসিক রোগ তৈরী হচ্ছে। যা আমাদের প্রতিদিনকার জীবনে বিভিন্ন রকম বাঁধা সৃষ্টি করছে। যেমন সামাজিক সম্পর্কে সমস্যা,পারিবারিক জীবনে সমস্যা, দৈনন্দিন জীবনে ব্যাঘাত। এমনকি মারাত্নক মানসিক ব্যাধি এই চাপের কারণে বেড়ে উঠে।
তাই শারীরিক সমস্যা বা ব্যাধির মত আমাদের মানসিক সমস্যার দিকে মনোযোগ আরোপ করা জরুরী। মানসিক চাপ কমানোর জন্য আমরা সাধারণত কিছু পদক্ষেপ নিলে আমাদের প্রতিদিনকার স্বাভাবিক চাপ হ্রাস পাবে।
*রুটিনমাফিক কাজ করা।
*যখনকার কাজ তখন করা।
* যখন চাপ অনুভব করে, তার পিছে কারণ অনুসন্ধান করা। কেন চাপ অনুভব করছে! চাপের কমবে কোন কাজটি করলে তা খেয়াল করা। খেয়াল করা কোন যোগানের অভাবে চাপ তৈরী হয়েছে তা জানা। আর চাপের কারণ যৌক্তিক বা অবাস্তব কি না, লক্ষ্য করা।
*নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করা।
*চাপ অনুভব করলে Breathing Exercise করলে চাপ কিছুটা কম অনুভূত হবে।
সর্বোপরি, যে চাপ আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাপনে ব্যাঘাত ঘটায় আর তা দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহত থাকে, সেক্ষেত্রে ব্যক্তিকে কোনো মানসিক স্বাস্থ্য প্রোফেশনালের শরণাপন্ন হতে হবে।